সোমবার, ৩০ Jun ২০২৫, ১১:৫২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম

ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের কবলে টাঙ্গাইলে হাজারো গ্রাহক

ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতায় টাঙ্গাইল জেলার পাঁচ উপজেলায় গ্রাহকদের ওপর ‘ভূতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট জোনাল অফিসের কর্মকর্তারাও।

মিটার না দেখে বিল, ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেন ডিজিএম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তর টাঙ্গাইলের গোপালপুর, মধুপুর, ধনবাড়ী, ঘাটাইল ও ভূঞাপুর উপজেলায় পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় দুই লক্ষ। সম্প্রতি বিতরণকৃত জুন মাসের বিদ্যুৎ বিল পেয়ে অনেক গ্রাহকই হতবাক। সাধারণত যাদের বিল তিন-চারশ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, তাদের অনেকের হাতে গিয়েছে হাজার থেকে বারোশ টাকার বিল।

গোপালপুর উপজেলার সোনামুই গ্রামের ৪৫ জন আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহক অভিযোগ করে জানান, মিটার না দেখে অনুমান করে ইউনিট বসিয়ে বিল তৈরি করা হয়েছে। ফলে একজন গ্রাহকের মিটারে ৫০ থেকে ৩৫০ ইউনিট পর্যন্ত অতিরিক্ত রিডিং দেখিয়ে বিল করা হয়েছে।

ধোপাকান্দি ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের আবাসিক গ্রাহক তাওফিক আহমেদ বলেন, “মিটার রিডাররা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনে থাকায় মাঠে না গিয়ে অফিসে বসে অনুমান করে বিল করছেন। আমার বাড়ির মিটারে ৩০ জুন ইউনিট দেখায় ৬৪৭৫, অথচ বিল বানানো হয়েছে ৮ জুন ৬৬৩০ ইউনিট দেখিয়ে।”

সোনামুই গ্রামের গৃহবধূ রহিমা বেগম বলেন, “৩০ জুন মিটার রিডিং ১০১৫ ইউনিট হলেও বিল করা হয়েছে ১২৬৫ ইউনিট ধরে।”

সোনামুই মসজিদ কমিটির সভাপতি বিপ্লব খান জানান, “মসজিদের বর্তমান মিটার রিডিং ১৫৮৬ ইউনিট হলেও বিল দেওয়া হয়েছে ১৭২০ ইউনিট হিসেবে।”

এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে ধনবাড়ীর মুশুদ্দী, কেরামজানী, পাইস্কা ও বলিভদ্র, মধুপুরের পিরোজপুর, শোলাকুড়ি, গোলাবাড়ী ও চাপড়ী এবং ঘাটাইলের গারোবাজার ও লক্ষিন্দর গ্রামেও। গ্রাহকদের অভিযোগ, মিটার রিডাররা তিন মাস ধরে আন্দোলনের কারণে মাঠে যাচ্ছেন না। অফিসে বসেই অনুমান করে বিল দিচ্ছেন, ফলে সাধারণ গ্রাহকরা দ্বিগুণ-তিনগুণ বিলের বোঝা বইতে বাধ্য হচ্ছেন।

এছাড়া, পল্লী বিদ্যুৎ নিয়ম অনুযায়ী ইউনিট ভিত্তিক ভিন্ন ভিন্ন ট্যারিফ হার প্রযোজ্য—যেমন, ১-৭৫ ইউনিট পর্যন্ত ৫.২৬ টাকা (ভ্যাট ব্যতীত), ৭৬-২০০ ইউনিট পর্যন্ত ৭.২০ টাকা। অতিরিক্ত ইউনিট পড়লে বিলের হারও বেড়ে যায়। অনুমাননির্ভর বিল দেওয়ায় অনেকের বিল অনিয়মিতভাবে বেড়ে গেছে।

এ বিষয়ে মধুপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম এমাজ উদ্দীন সর্দার বলেন, “মিটার রিডাররা আন্দোলনে থাকার কারণে ঘরে বসেই বিল করেছে। এ কারণে অনেক বিলেই সমস্যা হয়েছে। তবে গ্রাহকরা অফিসে এসে জানালে তাদের বিল ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। দায়িত্বে অবহেলা করা কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

গোপালপুর জোনাল অফিসের ম্যানেজার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “এরই মধ্যে ১২-১৩ জন গ্রাহকের বিল সংশোধন করা হয়েছে। বাকি সমস্যাগুলো ধাপে ধাপে সমাধান করা হবে।”

সংবাদটি শেয়ার করুন :

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত