‘তীব্র গ্যাস সংকটের ফলে সার কারখানাগুলো যখন সক্ষমতার ৬০% অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে, ঠিক সেই মুহুর্তে সারকারখানায় গ্যাসের মুল্য প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধির সুপারিশ কোনো বিবেচনাতেই যৌক্তিক হতে পারে না, বরং এটা সারখানাসহ দেশের কৃষক শ্রেনীর জন্য উদ্বেগ জনক ও বাস্তবতা বির্বজিত বলে’ মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ'র শীর্ষ নেতৃত্ব।
তারা বলেন, ‘সার খানায় গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ফলে এর প্রভাব শুধু গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এতে নিশ্চিত করেই সারের মূল্যবৃদ্ধি পাবে একই সাথে কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচও বৃদ্ধি পাবে। ফলে বাজারে কৃষিপণ্যের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। যেখানে টানা মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের প্রকৃত আয় হ্রাস পাচ্ছে এবং জীবনযাত্রায় নানা সংকট তৈরি হচ্ছে, সে সময়ে এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে সেটা ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’-এর মতোই হবে।’
বুধবার (৮ অক্টোবর) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘সারের মূল্যবৃদ্ধি পেলে কৃষকদের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে, যা উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে এবং এর সরাসরি প্রভাব পড়বে খাদ্যপণ্যের মূল্যের উপর, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। ভর্তুকি নিরসন না করে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি হলে সমস্যা আরও জটিল হবে। অতীতে সরবরাহ বৃদ্ধির কথা বলে মূল্যবৃদ্ধি করা হলেও গ্যাসের সংকট আরও তীব্র হয়েছে। ম্ল্যূবৃদ্ধি করলে সার কারখানাগুলো আর্থিক সংকটে পড়বে, গ্যাস বিল পরিশোধে বিলম্ব হবে এবং উৎপাদন হুমকির মুখে পড়তে পারে।’
তারা বলেন, ‘সরকারকে ভাবতে হবে দেশের কৃষি ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য ও জীবিকা নিশ্চিত করে থাকে। তাই সার কারখানায় গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষির ওপর বোঝা চাপানো সঠিক হবে না। সার কারখানায় উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে, তবে গ্যাসের মূল্যও বৃদ্ধি করা যাবে না। সব দিক বিবেচনা করেই সরকারকে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে। মূল্যবৃদ্ধি না করে সংকট উত্তরণের জন্য দেশের সকল সম্ভাবনাময় জায়গায় গ্যাস কূপ খনন করা প্রয়োজন। সাথে সাথে বিদেশ থেকে গ্যাস আমদানি করে অতি দ্রæত গ্যাস সংকট দূরা করা দরকার। মূল্যবৃদ্ধি করে গ্যাস সংকটের সমাধান করা যাবে না। বরং সংকট আরও মারাত্মক আকার ধারণ করবে।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘সার কারখানায় গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবে এটাই প্রমানিত হচ্ছে যে, আইএমএফের ঋণের শর্ত পূরণ করতে গিয়েই কৃষি খাত থেকে ধাপে ধাপে ভর্তুকি তুলে নেওয়ার পথ বেছে নিচ্ছে সরকার। দারিদ্র্য বাড়ছে, মানুষের প্রকৃত আয় কমছে, একের পর এক ফসল উৎপাদনে কৃষককে লোকসানের দুষ্টচক্রে আটকে থাকতে হচ্ছে। এমন রূঢ় বাস্তবতায় সার কারখানায় গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সুপারিশ এককথায় বাস্তবতাবিবর্জিত। এইে বষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পূর্বে অবশ্যই সরকারকে সার কারখানায় গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।’