‘সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, গুদামঘর, বাণিজ্যিক কেন্দ্র, এমনকি আবাসিক ভবনেও আগুন লাগছে নিয়মিতভাবে। এই অগ্নিকান্ডগুলো শুধু সম্পদের বিপুল ক্ষতি ঘটাচ্ছে না, বরং মানুষের মনে সৃষ্টি করছে গভীর উদ্বেগ ও আতঙ্ক। জনমনে প্রশ্ন উঠছে, এই অগ্নিকান্ড কি নিছকই দুর্ঘটনা, নাকি এর পেছনে রয়েছে পরিকল্পিত অরাজকতার ছায়া?’ বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ'র শীর্ষ নেতৃদ্বয়।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় একাধিক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। কোথাও পোশাক কারখানায়, কোথাও খাদ্য গুদামে, কোথাও আবার সরকারি দপ্তরে অগ্নিকান্ডে অপুরণীয় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সর্বশেষ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ এলাকায় আকস্মিক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। অনেক ক্ষেত্রেই তদন্ত শেষ হওয়ার পূর্বেই গুজব ছড়িয়েছে যে, এটি দুর্ঘটনা নয়, বরং উদ্দেশ্যমূলক আগুন’। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স জানায়, অনেক অগ্নিকান্ডের কারণ হিসেবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট, গ্যাস লিকেজ বা অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার দুর্বলতাকে দায়ী করা হচ্ছে। তবে কিছু ঘটনায় সন্দেহজনক উপাদানও পাওয়া গেছে, যা নাশকতার সম্ভাবনাকে একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘দেশবাসীর মনে আশঙ্কা তৈরী হয়েছে যে, বর্তমান সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে ধারাবাহিক অগ্নিকান্ডের ঘটনা কেবল দুর্ঘটনা হিসেবে দেখলে তা হবে সরলীকরণ। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, একটি বিশেষ গোষ্ঠী হয়তো উদ্দেশ্যমূলকভাবে অগ্নিকান্ড ঘটিয়ে দেশের স্থিতিশীলতা এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে—সব ঘটনাই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হচ্ছে এবং কোনো অপরাধমূলক কর্মকান্ডের প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তারা আরো বলেন, ‘অগ্নিকান্ডে ধ্বংস হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে উৎপাদন ও ব্যবসা, কর্মহীন হচ্ছেন হাজারো খেটে খাওয়া মানুষ। সামাজিকভাবে এই ঘটনাগুলো মানুষের মধ্যে তৈরি করছে ভয়, অবিশ্বাস ও নিরাপত্তাহীনতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অগ্নিকান্ড শুধু একটি শারীরিক বিপর্যয় নয়, এটি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সামাজিক আস্থার ওপরও বড় আঘাত।’
নেতৃদ্বয় বলেন, সাম্প্রতিক অগ্নিকান্ডের পুনরাবৃত্তি একটি গভীর উদ্বেগের বিষয়। এটি শুধু অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাই প্রকাশ করছে না, বরং দেশের সামগ্রিক প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক পরিবেশের ওপরও আঘাত হানছে। প্রতিটি ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত, অপরাধীদের শনাক্তকরণ ও ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা বা ষড়যন্ত্র প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরী। কারণ, অগ্নিশিখার ধ্বংস শুধু ভবন নয়, এটি দেশের আস্থা, স্থিতিশীলতা ও দেশের ভবিষ্যৎ ছাই করে দিতে পারে।’