আবু কাওছার
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, উন্মুক্ত স্থানে বৃক্ষরোপণ করে একটি সবুজায়িত নগরী গড়ে তুলতে হবে। রাজধানীর বায়ু দূষণরোধে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে জিরো সয়েল কর্নসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। পূর্বাচল নতুন শহরকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার উদ্যোগ থাকলেও এর শুরুতেই বন উজাড়ের মাধ্যমে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। ২০১০ সাল থেকে ক্রমাগত এ অবস্থা চলছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে নানা আইনি প্রক্রিয়ায় বন উজাড় বন্ধের চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় তা পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়নি। আবাসন প্রকল্প পরিকল্পনার শুরুতেই সবুজায়ন এবং জলবায়ু অভিযোজনকে অগ্রাধিকার না দেওয়ায় আগামী ২০ বছরের মধ্যে এ এলাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যেতে পারে।
২৬জুন বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পরেশন ও বন অধিদপ্তর আয়োজিত পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ১১নম্বর সেক্টরের হারারবাড়ি লেকপাড় চত্বরে পরিবেশ সচেতনতা ও নগর বনায়নের লক্ষ্যে আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহম্মেদ, রাজউকের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক ড. কামরুজ্জামান প্রমুখ।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরো বলেন, এখন যেদিকেই তাকান শুধু সবুজ আর সবুজ আগামী ২০/২৫ বছর পরে এ সবুজ থাকবে না, এ ধ্বংস প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ২০১০ সাল। ,আমরা আপ্রাণচেষ্টা করেছি, আদালতে গিয়েছি শেষ পর্যন্ত ১৪৪ একর বনভূমি রক্ষা করতে পেরেছি। উপশহরের আবহাওয়াটা একদম বনের মতোই ছিল। সেটা আমরা মানুষের আবাসানের জন্য ধ্বংস করেছি। যাদের আবাসনের জন্য করেছি তারা কেউ আর রাস্তায় নেই। যাদের আবাসন নেই , আমরা কিন্তু এখানে আবাসনের ব্যবস্থা করে দিতে পারিনি। যাদের আছে তাদেরকই আমরা দিয়েছি, যাদের নেই তাদের কতা চিন্তাও করিনি। আবাসন সমস্যা সমাধান খুবই জরুরি।
এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি কেবল একটি সূচনা মাত্র। সবুজায়নের লক্ষ্যে তরুণ নেতৃত্বের অংশগ্রহণে আমরা নতুন নতুন বনায়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। জিরো-সয়েল নীতির মাধ্যমে শহরের ছাদে, খালি জায়গায় এবং প্রতিটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এ ধরণের উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমাদের পরিবেশগত ভারসাম্য ফিরিয়ে আনবে। পূর্বাচলের ৩০টি সেক্টর জুড়ে সড়ক, সড়ক বিভাজন, ফুটপাত, খাল ও জলাশয়ের পাড়সহ বনায়নযাগ্য প্রতিটি জায়গায় পর্যায়ক্রমে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। প্রত্যেকেই গাছ লাগাতে হবে। লতা হলেও লাগান। এবার পাঁচ লাখ গাছের চারা রোপণ করা হবে । পরে গাছের চারা রোপণ করে কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।